নদী ভাঙনরোধ ও অনিয়ম ঠেকাতে সন্ধ্যা ৬টার পর বালি উত্তোলন বন্ধ করতে যাচ্ছে সরকার। এ নিয়ে নতুন একটি নীতিমালা করছে সরকার।সোমবার (১৩ জুন) সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত বিএসআরএফ সংলাপে এ তথ্য জানান পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।

তিনি বলেন, আমরা বালি ওঠানো বন্ধ করতে চাচ্ছি না কিন্তু নির্দেশনা দিচ্ছি, যেখান থেকে ওঠানোর কথা বলছি যাতে সেখান থেকেই ওঠানো হয়। বালি উত্তোলনের ক্ষেত্রে আমরা একটা নীতিমালা করছি, যা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আছে।

এ ক্ষেত্রে আমরা চাই বালি যাতে রাতে উত্তোলন না হয়। নদীভাঙনের বিভিন্ন কারণ আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ বালি উত্তোলন। এই ব্যবসা এখন অনেক রমরমা। রাতের অন্ধকারে নদীর কিনারা থেকে বালি ওঠায়। এ রকম হলে লোহা দিয়ে বাঁধ দিলেও কিন্তু বাঁধ থাকবে না, এটা আমি বলেছি।

পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এ পর্যন্ত ১৭ হাজার কিলোমিটার বাঁধ আমরা নির্মাণ করেছি। অতীতে যারা এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন, তারা ভাঙন এলাকায় কম গেছেন। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় নিজেই গিয়েছি এবং দেখেছি। আগের মন্ত্রীদের আমি দোষারোপ করব না। কারণ বাংলাদেশ আগে অতটা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী ছিল না।

তিস্তা চুক্তি নিয়ে যা বললেন প্রতিমন্ত্রী

তিস্তা চুক্তির অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে জাহিদ ফারুক বলেন, তিস্তা চুক্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী, আমরা আগে চেষ্টা করেছিলাম। কাজটা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আছে। এটার স্টাডি হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে গেছি। কোন কোম্পানি কাজটা করবে সেই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যালোচনা করছে। পর্যালোচনার পর একটা দিকনির্দেশনা দিলে সেই বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, দুই বছর আগে আমি যখন হাঙ্গেরি গিয়েছিলাম, তখন ভারতের জলশক্তি মন্ত্রীর সঙ্গে আমার দেখা হয়। আসার পর আমি তাকে কয়েকবার পত্র দিয়েছি। আমি তাকে বাংলাদেশে আসার জন্য দাওয়াত দিয়েছি। বলেছি, আসেন আমরা আলোচনা করি। উনি হয়তো একটা সময় দেখে আসবেন।

বাংলাদেশ সরকার তিস্তা চুক্তি করতে আগ্রহী উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিস্তাটা নিয়ে আমরা নিজেরাই উদ্বিগ্ন। এই চুক্তিটি আমরা করতে চাই। ধীরগতিতে হলেও কাজ আগাচ্ছে। আপনারা জানেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কারণে কাজটি স্লো হয়ে গেছে। হয়তো অচিরেই তিস্তা নদীর পানি বণ্টনের ব্যাপারটি সমাধান করতে পারবো।

দেশের কোনো এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পর নদী থেকে বালি উত্তোলন করা যাবে না বলে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) চলতি বছর ২০ জানুয়ারি নির্দেশনা দেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী।